রুপার আলমারি খুলে কাপড় রাখতে গিয়ে একটা ফাইলের মধ্যে বেশ কিছু কাগজ দেখতে পায়। এগুলো দেখে মনে হচ্ছে সারর্টিফিকেট।
#গল্প_সংসার পার্ট 3 | chokherjole.blogspot.com
#গল্প_সংসার পার্ট 3
.
এখন সে সম্পুর্ণ বুঝে গেছে যে কাইফকে পাগল বানিয়ে রাখা হয়েছে।
বেশ কিছুক্ষণ পর বিয়ে বাড়ি থেকে সবাই চলে এলো।রুপা ঘরে প্রবেশ করেই ছুটে গেলো কোহিনূরের রুমের দিকে। দরজা বন্ধ। দুইবার টোকা দেওয়ার পরই দরজা খুলে বের হয়ে এলো কোহিনূর।
-আমার সাইফ কোথায় কোহিনূর ?
-ওই যে। (খাটের পায়ের দিকে ইশারা করলো কোহিনুর।রুপা ওই দিকে তাকিয়ে দেখে সাইফকে বেধে রেখেছে।)
-কোহিনুর সাইফের বাধন খুলে দাও।
-না আম্মা।
-আমি বলছি তুমি আমার ছেলের বাধন খুলে দাও।
-মা কাইফও তো আপনার ছেলে!আমি কাইফের স্ত্রী। আপনার ছোট ছেলে সাহস করে কি করে আমাকে স্পর্শ করার?
-আমার সাইফ যা করেছে তার জন্য আমি লজ্জিত।আমার ছেলের বাধন খুলে দাও।
-উহু!
-তুমি কেমন মেয়ে?
-আপনি কেমন মা?
(কোহিনূরকে দরজা থেকে ধাক্কা দিয়ে রুমে প্রবেশ করেন রুপা। এর পর সাইফের হাতের আর পায়ের বাধন খুলে দিয়ে রক্তাক্ত সাইফকে রুপা নিয়ে যায়)
-নিয়ে যান আম্মা। আর হ্যা ছেলের খেয়াল রাখবেন।আর যেন এমন না করে।
(কোনো কথার উত্তর না দিয়েই চলে গেলেন রুপা)
.
কোহিনূর এখন প্রচুর সতর্ক। কাইফকে নিয়ে তার ভাবনার অন্ত নেই। এদিকে অতীত যানতে হলে কোহিনূরকে অবশ্যই কারও সাহায্য নিতে হবে।
এসব ভাবতে ভাবতেই কোহিনূর বাগানে চলে আসে। মালি বাগান পরিষ্কার করছেন। বয়স 60 এর কাছাকাছি।
-চাচা আপনি কতো বছর ধরে এই বাড়িতে রয়েছেন?
-মা জাম, আমি এই বাড়িতে পঁচিশ বসসর ধইরা কাম করতাছি।
-আমি আপনার কাছে কিছু জানতে চাই চাচা।বলবেন কি?
-কি জানবার চাউ মা?
-আগে বলেন সত্যি করে বলবেন তো?
-হ মা।
-আচ্ছা সাইফ আর কাইফ কেমন ভাই?
-ক ক কি কইতাছো মা?
-আমি যা জিজ্ঞেস করছি এর উত্তর দিন চাচা।
-না মানে আর কি
-চাচা বলেন প্লিজ।
- সৎ ভাই তারা।
-সাইফের মায়ের ব্যাপারে আপনি কি কি যানেন চাচা?
-মা, এইসব কথা এইনে না বলাই ভালা।রুপা ম্যাডাম দেখলে কেলেংকারী হয়ে যাবে।
-আচ্ছা চাচা। তাহলে কবে, কোথায় বলবেন?
-কালকে তো রুপা ম্যাডাম বাইরে যাবে,তহন তুমি এইখানে আইসো।আমি সব কইমু তোমারে।
-আচ্ছা চাচা।
.
হাতে একটা গোলাপ নিয়ে বাগান থেকে ফিরে আসে কোহিনূর। রুপা দারিয়ে আছে তার রুমের সামনে-
- কোহিনূর, ওই কাজের লোকের সাথে তোমার এতো কিশের কথা?
- কার সাথে আমি কথা বলছিলাম আম্মা?
-মালির সাথে!
-ওহ ওই টা (কোহিনূর চিন্তা করছে কি বলবে এখন)
-হ্যা ওইটা।
-আসলে গোলাপের কোন চারাটা বেশি ভালো,তা নিয়ে কথা বলছিলাম। আমার বাগানের খুব সখ তো তাই আর কি।
-ও, এদেরকে বেশি প্রশ্রয় দেবে না কেমন?
-আচ্ছা আম্মা।
-ওহ আমি যেই কাজের জন্য এসেছি।
-জ্বি আম্মা বলেন।
-আজ থেকে কাইফকে এই মেডিসিন গুলো খাওয়াবে।কেমন?
-আম্মা আগের মেডিসিন গুলোর কি হয়েছে? ওই গুলো খাওয়াবো না কেন?
-যা বলেছি তাই করো।
-আচ্ছা আম্মা।
.
অজানাকে জানার বা এই রহস্য উদঘাটন করা থেকে একটু দূরে কোহিনূর। সকালে সকল অজানাকে জানার উত্তেজনায় রাতে ঘুম হচ্ছে না ওর। কি করবে বুঝে পাচ্ছে না। এদিকে কাইফ ঘুমিয়ে গেছে।
কোহিনূর ধীরে ধীরে নিজের রুমের দরজা খুলে বাহিরে বেড়িয়ে আসে।.......
.
বেশ চিৎকার চেচামেচিতে ঘুম ভেংগে যায় কোহিনূরের।
ফ্রেশ হয়ে বের হয়েই সে জানতে পারে যে মালি চাচা আর নেই। হার্ট ফেইল করে মারা গেছে। কোহিনূর বুঝে গেছে যে রহস্যটাকে রহস্য রাখার জন্যই মালি চাচাকে মেরে ফেলা হয়েছে।
তাহলে হার্ট ফেইল হওয়ার ব্যাপারটা কি নিছকই সাজানো নাটক?
হতেই পারে। ঔষধ যেমন আমাদের জীবন বাঁচায় তেমনই ভুল ঔষধ আমাদের জীবন কেড়েও নিতে পারে।
যতই ভাবছে কোহিনূরের কাছে রহস্যটা আরও বেশি জট পাকিয়ে যাচ্ছে।
.
-কোহিনূর মা রে! কেমন আছিস?
-এইতো আব্বু ভালই আছি। তোমরা সবাই কেমন আছো?
-হ্যা রে আমরা সবাই ভালো আছি। তোর মা তোর সাথে কথা বলতে চায়!
-দাও আব্বু।
- কেমন আছিস মা আমার?
-হ্যা আম্মু ভালো আছি।তুমি কেমন আছো?
-আগের চাইতে এহন অনেক্কানি ভালাই আছি।
-তাই আম্মু?
-হ রে,যানস এহন আর আমগো আগের দিন নাই। তোর শশুড় আসলেই অনেক ভালা রে।
-হ্যা আম্মা।
-তোর জামাই কেমন আছে? (তারা এখনও জানে না যে পাগল কাইফের সাথে তাদের মেয়ের বিয়ে হয়েছে।)
-সবাই ভালো আছে আম্মু।
-তুই কি ব্যাস্ত?
-একটু।
-আচ্ছা তাইলে এহন রাইক্কা দেই।পরে ফুন দিয়াম নে।
-আচ্ছা।
.
রুপা ঘরে নেই। আমির আলীর সাথে বাহিরে গিয়েছে।
রুপা যাবার আগে কোহিনূরকে বলেছিল তাদের রুমটা যেন একটু গুছিয়ে দেয়।
কোহিনূর রুম গোছানো শেষে রুপার আলমারি খুলে কাপড় রাখতে গিয়ে একটা ফাইলের মধ্যে বেশ কিছু কাগজ দেখতে পায়। এগুলো দেখে মনে হচ্ছে সারর্টিফিকেট। সারর্টিফিকেটে চোখ বোলানোর সাথে সাথে চোখ ছানাবড়া হয়ে যায় কোহিনূরের।
কেন না এই সারর্টিফিকেট একজন মেডিসিন স্পেশালিষ্টএর। আর এই মেডিসিন স্পেশালিষ্ট আর কেউ না স্বয়ং রুপা!
কোহিনূর এখন সম্পুর্ণ ব্যাপারটা বুঝে গেছে। কাইফ কে ডাক্টার দেখানো হয় না কারণ ডাক্তার তো ঘরেই রয়েছে।
তার মানে সকল সূত্র গুলো একজোট হতে শুরু করেছে। রহস্যের জটলা খুলতে চলেছে। শুধু মাত্র সময়ের অপেক্ষা।
.
প্রায় 10 দিন অতিবাহিত হয়ে গেছে। কোহিনূর সমীকরণ মেলাতেই ব্যাস্ত। এদিকে কাইফের বেশ উন্নতি হচ্ছে।
এই দশদিনে একবারের জন্যও কাইফকে রুপার দেওয়া মেডিসিন খাওয়ানো হয় নি। অথচ কাইফ স্বাভাবিক আচরণই করছে! ঘুমও হচ্ছে ওর।
এখন বেশ মনেও রাখতে পারছে কাইফ। আগে ওর স্মৃতিটা এমন ছিল যে হঠাত করেই পুরনো কোনো ঘটনা মনে পরে যেতো সকল পাঠ poetry কাব্য তে পাবেন
দিন যত যাচ্ছে কোহিনূরের রহস্যের যট তত খুলছে।
এদিকে কোহিনূরের হঠাৎ একজনের কথা মনে পড়লো, যে তাকে সাহায্য করতে পারবে। তার পরিচিত এক বড় বোন গোয়েন্দা পুলিশ। তার কাছেই সাহায্যের জন্য যাবে বলে ভেবে নিয়েছে কোহিনূর।
পরদিন খুব সকালে শপিং এর কথা বলে ঘর থেকে বের হয় কোহিনূর। আধা-ঘন্টা লাগবে গন্তব্যে পৌঁছাতে।
.
কাইফের ঘুম ভাংতেই দেখে পাশে কোহিনূর নেই। রুম থেকে বের হয়ে আশেপাশে কোহিনূরকে খুজতে খুজতে কাইফ স্টোর রুমে চলে আসে। সেই বাক্সের সাথে ধাক্কা খেয়ে পরে যায় সে। তখনই দেখে.....
চিৎকার করে জ্ঞান হারায় কাইফ।
.
-আপু আপনি অফিসে? (কোহিনূর তার সেই পরিচিত গোয়েন্দা পুলিশ আপুর সাথে মোবাইলে কথা বলছে )
- হ্যা। তুমি চলে এসো।(সারা)
#চোখের_জলে
#প্রেম ও #বিয়ের_গল্পের_কথা
#chokherjole