#গল্প_সংসার_poetry_কাব্য #2nd part | chokherjole.blogspot.com

 

text

#গল্প_সংসার_poetry_কাব্য #2nd part | chokherjole.blogspot.com

#গল্প_সংসার_poetry_কাব্য #2nd part | chokherjole.blogspot.com

#গল্প_সংসার_poetry_কাব্য #2nd part | chokherjole.blogspot.com
#গল্প_সংসার_poetry_কাব্য #2nd part | chokherjole.blogspot.com

#গল্প_সংসার_poetry_কাব্য #2nd part


(কোহিনূর কাইফের দিকে তাকায়,ছেলেটা ওকে উপরে উঠে আসতে বলে)

শাড়িটা শরীরে কোনো মতে জড়িয়ে বিছায় এসে বসে কোহিনূর। ওর কান্না থামছেই না। পাগল কাইফ কতো ভাবে বোঝাবার চেষ্টা করছে!

.

সকাল গড়িয়ে দুপুর। কোহিনূর এখন পর্যন্ত কিছুই মুখে দেয় নি। এদিকে কাইফ জেদ ধরে বসে আছে "কুহু তো খায় নি এখনও আমি কেন খাবো? "

কোনো ভাবেই কেউ কাইফকে খাওয়াতে পারছেন না। রুপার বোঝা হয়ে গেছে কোহিনূর ছাড়া আর কেউ এই মুহুর্তে কাইফকে খাওয়াতে পারবে না। তাই রুপা কাইফের রুমে গেলো।

গিয়ে দেখে কোহিনূর বসে আছে,চোখগুলো লাল হয়ে উঠেছে আর ফুলে গেছে। বোঝাই যাচ্ছে মেয়েটা প্রচুর কান্না করেছে।

দরজায় দুইটা টোকা দিয়ে রুপা বলেন -

-কি ব্যাপার এখনও যে নিচে এলে না! (বলতে বলতে রুমে ঢুকলেন রুপা)

-ইচ্ছে করছে না।

-তোমার এখন খাবারের প্রয়োজন। এভাবে চলতে থাকলে তুমি অসুস্থ হয়ে যাবে যে। (বিছানায় বসে কোহিনূরের ঘারে হাত দিয়ে কথা গুলো বলছেন রুপা)

-উহু।

-তুমি চাইলে সাইফকে আমি ঘর থেকে বের করে দেব। আর যদি পারও তবে সাইফকে ক্ষমা করে দাও!

-আমার জায়গায় আপনি থাকলে কি করতেন আম্মা?

(রুপা আর কথা না বারিয়ে কাইফের রুম থেকে চলে আসে।)

কাইফ খাবে না মানে খাবেই না। কোহিনূর এই সবই শুনছে।কাইফের জন্য ইদানীং তার বড্ডো মায়া হয়। হয়তো বা এটা মায়া না এটা অবচেতন মনের প্রেম!

কোহিনূর রুম থেকে বের হয় প্রায় দুপুর তিন টায়। ডাইনিং এর পাশেই রান্না ঘর। ডাইনিং প্লেস পার হয়ে রান্না ঘরের দিকে যাওয়ার সময় কোহিনূর খেয়াল করলো সাইফ কেমন একটা বিচ্ছিরি হাসি হাসছে তাকে দেখে।

কোহিনূরের রক্ত হীম হয়ে আসছে। এই হাসির পেছনের রহস্যটা কোহিনূরের কাছে স্পষ্ট। এখন কোহিনূরকে আরও সাবধানে থাকতে হবে। একটা মেয়ে কতটা অসহায়! কতটা নির্যাতিত!

কাইফের জন্য খাবার নিয়ে রুমে চলে এসেই দরজা লাগিয়ে দেয় কোহিনূর। প্রচুর ভয় হচ্ছে তার।

কোহিনূরকে দেখেই কাইফ বলে

- কুহু তুমি আমার জন্য নিয়ে এসেছো? জানো আমার না বড্ডো বেশি খিদে পেয়েছে।পেয়েছে।

-তাহলে সকাল থেকে কিছু খাউ নি কেন?

-তুমিও তো কিছু খাউ নি!

-আচ্ছা, নাও এখন খেয়ে নাও।

-তুমি আমাকে খাইয়ে দেবে?

-আচ্ছা।

(ভালোই লাগছে কোহিনূরের। কাইফের মধ্যে বেশ পরিবর্তন এসেছে।আগের মতো কথায় কথায় হাইপার হবার প্রবনতাও এখন বেশ খানিকটা কমে গেছে।)

-আর খাবো না। শেষ।

-আরেকটু বাকি। শেষ করো।

-আমার আম্মাও আমাকে এভাবে খাইয়ে দিতো। তুমি একদম আমার আম্মার মতো।

-কেন?(হেসে ফেলে কোহিনূর)

-আম্নাও আমাকে অনেক ভালোবাসতো। তুমিও তো আমাকে ভালোবাসো! যানো তুমি আসার আগে কেউ আমাকে ভালোবাসতো না। আর রুপা আম্মু তো আমার খোজ খবরই রাখতো না। রাখতো না।

(কথাটা শুনেই কোহিনূরের বুকটা ধক করে উঠলো। কাইফ কার কথা বলছে? তবে কি রুপা কাইফের আপন মা নয়? এমন হাজারো প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে কোহিনূরের মাথায়। কাকে জিজ্ঞেস করবে? কিভাবে জিজ্ঞেস করবে?)

-এই কুহু বন্ধু, তুমি খাবএ না?

(বেশ কিছুক্ষণ চুপ থাকে কোহিনূর)

-হ্যা খাবো। আচ্ছা কাইফ তুমি কার কথা বলছিলে? কে তোমার আম্মা?

-আমার ত আসছে না মনে! মনে আসছে না।

-ওহ আচ্ছা।

.

প্রায় এক সপ্তাহ কেটে গেছে। আজকে কাইফ আর কোহিনূর বাদে ঘরের সকলেই এক বিয়ের দাওয়াতে যাবে।

বাসায় একজন ড্রাইভার ছাড়া বাহিরের আর কেউ নেই। আজকেও সাইফ যাবার সময় কেমন একটা রহস্যময় হাসি হাসলো।

কোহিনূর আসন্ন বিপদের পূর্বাভাস ইতি মধ্যেই পেতে শুরু করেছে। তাই আগের থেকে বেশি সাবধানতা অবলম্বন করছে।

সকলেই চলে গেলো। এই বিরাট বাড়িটা একদম খালি খালি লাগছে। কোহিনূর ভাবছে সে কি কাইফের সেইদিনের কথাটাকে নিয়ে একটু ঘাটাঘাটি করবে? আজকে তো ঘড় একদম ফাকা। সুযোগ আজকেই।

বেশ কিছুক্ষণ খোজা খুজি করেও কোহিনূর কোনো কিছুই পেলো না। যখন নিজের রুমে চলে আসবে তখনই ওর মনে হলো স্টোর রুমটা দেখা হয় নি। সেই রুমটা দেখলে কেমন হয়?

যেই কথা সেই কাজ। রুমের দরজার ছিটকিনি খুলে কোহিনূর প্রবেশ করে। লাইটের সুইচ অন করে। কেমন একটা ডিম লাইট। লাল রঙের আলো।

উহু তেমন কিছুই চোখে পড়লো না কোহিনূরের। রুম থেকে বের হবার সময় একটা বাক্সের সাথে ধাক্কা খায় সে। এই বাক্সটা দেখা হয় নি। কেমন এক রোমাঞ্চ কাজ করছে কোহিনূরের মধ্যে। বাক্সটা লক করা। তাও আবার স্মার্ট লক। পিন কোড দিয়েই সম্ভবত এইটা লক করা। কোহিনূরের কোনো আইডিয়াই নেই লক খুলবে কিভাবে। বিরক্ত হয়ে রুম থেকে বের হবার জন্য সামনে আসতেই একটা আয়না খেয়াল করে।আয়নায় তার পেছনে থাকা শশুরের বিরাট ছবিটায় চোখ পরতেই উচ্ছ্বাসিত হয়ে ওঠে কোহিনূর ।

তার শশুরের দেয়ালে লাগিয়ে রাখা বিরাট ছবিটার ফ্রেমের চারপাশের নকশা আর এই লক করা বাক্সের নকশা প্রায় এক। এর চেয়েও বড় কথা ছবির ফ্রেমে একটা চার ডিজিটের পিন কোড লেখা। কোহিনূর কৌতুহল দূর করবার জন্যই মুলত ছবির ফ্রেমে থাকা নাম্বারটা বক্সের

পিন কোডে লিখে দেয়।আর সাথে সাথে বাক্সটা আনলক হয়ে যায়! ভেতরে যা দেখে কোহিনূর .....

.

রাত প্রায় দশটা। কাইফ আর সে খাওয়াদাওয়া শেষ করেছে মাত্র। কোহিনূর কাইফের জন্য মেডিসিন গুলো নিতে গিয়ে দেখে সেখানে একটাও মেডিসিন নেই। কল দেয় শাশুড়ি রুপার কাছে।

-আম্মা কাইফকে যেই মেডিসিন গুলো খাওয়ানো হয় তা ত শেষ হয়ে গিয়েছে!

-কি বলছো! কাল কেই ত আমি দেখলাম তিনটি করে অবশিষ্ট রয়েছে! ভালও করে দেখো।

-আম্মা আমি ভালো করে দেখেছি।

-আচ্ছা আমি ড্রাইভারকে বলে দিচ্ছি, ও নিয়ে আসবে।

-আম্মা ড্রাইভার তো কোথায় যানি চলে গেছে।আপনি প্রেস্ক্রিপশনটা আমাকে দিন আমি নিয়ে আসি।

-তুমি কি বলছো এসব?রাত কয়টা বাজে খেয়াল আছে তোমার? তোমার যেতে হবে না। আমি ড্রাইভারকে দিয়েই পাঠাচ্ছি।

(যা চিন্তা করেছিল কোহিনূর তাই হলো। প্রেস্ক্রিপশনটা তাকে দেওয়া হলো না।এর মানে অবশ্যই এইখানেই রহস্য লুকিয়ে আছে)

খুব ভালো করে দরজা লক করে ঘুমিয়েছে কোহিনূর। কেন যানি তার ঘুম আসছে না। বার বার সাইফের সেই বিচ্ছিরি হাসিটা ভেষে উঠছে।

এদিকে কাইফও ঘুমাচ্ছে না। কোহিনূর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। কোহিনূর সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে যে "যাই হোক এখন থেকে কাইফকে আর মেডিসিন গুলো খাওয়াবো না। "

কোহিনূরের ধারণা, মেডিসিনটা সঠিক না।

-কুহু তুমি ঘুমাবে না?

-হ্যা ঘুমাবো তো।

-আমার না খুব ভয় করছে।

-কেন? ভয় করার কি আছে কাইফ?

-বাহিরে দেখো। দেখো

-ঝড় হবে মনে হয়।

-ভয় করে আমার খুব। (হাইপার হয়ে উঠছে কাইফ।অতিরিক্ত ভয় পেয়েই মনে হয় চেহারা ফ্যাকাসে হয়ে উঠছে। একে শান্ত করতে না পারলে কোহিনূরের কপালে দুঃখ আছে। তাই সাত-পাচ না ভেবেই কাইফকে জোড়িয়ে ধড়ে কোহিনূর। ভয়ে কাপছে কাইফ। একদম মিশে আছে কোহিনূরের বুকের সাথে। আর বির বির করে বলছে "মেরে ফেলেছে,মেরে ফেলেছে" বার বার বলছে। চোখ বন্ধ করে ভয়ে কাপছে আর এক কথাই বলছে। কোহিনূর কাইফকে জিজ্ঞেস করেছে "কে মেরেফেলেছে?"

-ও মেরে ফেলেছে।

-কাকে মেরে ফেলেছে? Poetry কাব্য তে সব পেয়ে যাবেন

(জিজ্ঞেস করতেই দুই হাত দিয়ে শক্ত করে কোহিনূরকে জড়িয়ে ধরেছে। কোহিনূর এখন একদম নিশ্চিত যে তার কাইফ পাগল নয়।একে পাগল বানানো হয়েছে। কোনো সত্যি লুকিয়ে রাখবার জন্য। যা একমাত্র কাইফই যানে।)

ঝড় থেমে যায় কিছুক্ষণ পরেই। কিন্তু কাইফ এখনও কোহিনূরকে জাপটে ধরে আছে। তবে এখন কাইফকে দেখে মনে হচ্ছে সে আর ভয় পাচ্ছে না। কোহিনূর কাইফকে তার বাহুডোর থেকে মুক্ত করে দেয় ঠিকই কিন্তু কাইফ এখনও কোহিনূর কে জাপটে ধরে আছে। কোহিনূরকে অবাক করে দিয়ে কাইফ তার গালে চুমু খেলো।এর পর কপালে,চোখে,ঠোঁটে ঘারে........

খুব ভোরে কোহিনূর শাওয়ার নিয়ে বের হতেই রুমে এক পরিচিত গন্ধ পায়। বুকটা ধক করে উঠলো কোহিনূরের। তবে কি রুমে কাইফ আর সে ছারাও অন্যকেউ রয়েছে? ভাবতে ভাবতে গোসলখানা থেকে বের হয়ে আসে কোহিনূর। টেবিলের পাশে দারায়,তখনই পেছন থেকে কোহিনূরের কোমরে এক জোড়া হাতের স্পর্শ। চোখ বন্ধ করে কোহিনূর নিজেকে শান্ত রাখে। আসতে আসতে টেবিলের পাশে রাখা মোটা লাঠিটা বার করে পেছনের মানুষটার মাথায় আঘাত করে। এক ঝটকায় হাত ছেরে দিয়ে মাথায় ধরে চিৎকার দিয়ে বসে পরে সাইফ। কাইফের ঘুম ভেংগে যায়। এদিকে কোহিনূর বেধড়ক পেটাচ্ছে সাইফকে।

গায়ের সর্বশক্তি দিয়ে পেটাতে পেটাতে এক সময় ক্লান্ত হয়ে যায় কোহিনূর। এদিকে কাইফ হাত তালি দিচ্ছে আর হাসছে। ড্রাইভার রুপা কে কল করে সব ঘটনা বলে দিয়েছে৷ রুপা পাগলের মতো কোহিনূরের নাম্বারে কল করছে। কোহিনূরের কাছে কল রিসিভ করার সময় নেই। কাইফ চিৎকার করে কাদছে আর বলছে...... সাইফের বলা কথাটা শুনে কোহিনূর একদম স্তব্ধ! এখন সে সম্পুর্ণ বুঝে গেছে যে কাইফকে পাগল বানিয়ে রাখা হয়েছে। .

চলবে.....

#গল্প_সংসার_poetry_কাব্য #2nd part | chokherjole.blogspot.com

#চোখের_জলে 

#প্রেম ও #বিয়ের_গল্পের_কথা 

#chokherjole